মুসলিমদের কেনো ব্যবসা করা উচিত?
🟩 মুসলিমদের কেনো ব্যবসা করা উচিত?
🎯 ১. রাসূলুল্লাহ ﷺ ব্যবসা করেছেন, বিখ্যাত সাহাবীরা ছিলেন ব্যবসায়ী।
ব্যবসার মধ্যে রয়েছে বরকত, কল্যাণ। ব্যবসার ফযিলত নিয়ে অসংখ্য হাদীস আছে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- "সৎ, আমানতদার ব্যবসায়ীগণ কিয়ামতের দিন নবী, সিদ্দিক এবং শহীদদের সাথে থাকবেন।" (জামে আত-তিরমিজি: ১২০৯)
🎯 ২. একজন মুসলিম যখন ব্যবসা করবে, তখন সে নিজের, পরিবারে, সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে অংশ নিতে পারবে।
প্রথমত সে কর্মসংস্থান করতে পারবে, যার ফলে মানুষ উপকৃত হবে। তাছাড়া সে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে, যার ফলে সমাজের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবে।
জনৈক ব্যক্তি এসে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলকে জানায়, “নিজে চলার মতো আর্থিক ব্যবস্থা আমার আছে।” তারপরও তাকে ইবনে হাম্বল বলেন, “তুমি ব্যবসা কর। তাহলে সেটার লভ্যাংশ দিয়ে আত্মীয়-স্বজনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারবে। কেউ অসুস্থ হলে তার চিকিৎসা করতে পারবে।” (ইবনুল জাওযী, তালবিস: ২৮৫)
🎯 ৩. ব্যবসা করলে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, অন্যের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে না। সালাফগণ এই কারণে মানুষকে ব্যবসা করতে উৎসাহ দিতেন।
তাবেঈ আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ বলেন, “ব্যবসাকে তোমরা পেশা হিসেবে নাও। কেননা নিরাপদ থাকার অন্যতম বড় মাধ্যম হচ্ছে, মানুষ প্রতি মুখাপেক্ষী না থাকা।” (আল্লামা ইবনে আসাকির, তারিখে দিমাশক: ৫৬০-৫৬৩)
🎯 ৪. ব্যবসা করা আল্লাহর ওপর নির্ভরতা শেখায়।
অন্যদিকে চাকরি করলে সে মনে করবে, যাই হোক না কেনো মাস শেষে বেতন আসবেই। চাকরির ওপর এই নির্ভরতাকে শায়খ আবুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহিমাহুল্লাহ উল্লেখ করেছেন- এমনটা হলে এটা আকীদায় সমস্যার কারণ হতে পারে!
একজন চাকরিজীবী সকালে অফিসে যাবার আগে কি কখনো দু'আ করে, "হে আল্লাহ! আমার জন্য রিজিকের রাস্তা প্রশস্ত করে দাও, আমার রিজিক সহজ করে দাও?"
যারা ইতোমধ্যে চাকরি পেয়ে গেছে, মাসে ১০ হাজার, ৫০ হাজার, ১ লক্ষ টাকা বেতন পায়, তারা সাধারণত রিজিকের দু'আ করে না।
রিজিকের দু'আ না করতে করতে আনমনে একসময় ভাবা শুরু করে তাদের বস, সরকার তার রিজিকের ব্যবস্থা করছে।
একটানা কয়েক বছর চাকরি করা একজন যখন খুব সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে চলছে, তাকে যদি বলেন সে যেন তার রিজিকের জন্য দু'আ করে, রিজিকের জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করে, সে অবাক হবে।
কারণ, দু'আ না করার অনভ্যস্ততার ফলে 'আল্লাহ যে রিজিকদাতা' এই বিশ্বাসে তার জং ধরেছে!
আমানতদার ব্যবসায়ী প্রতিমুহূর্তে আল্লাহর ‘আর-রাজ্জাক’ গুণটি উপলব্ধি করতে পারে।
🎯 ৫. ব্যবসা সম্মান বাড়ায়।
একজন ব্যবসায়ী আত্মসম্মানের মধ্যে থাকতে পারে। ‘আল্লাহ ছাড়া কারো আনুগত্য করি না’ এই চিন্তা তার মধ্যে বেশি কাজ করে। অন্যদিকে, চাকরিজীবী একধরনের আতঙ্কে থাকে, কোথায় তার ভুল হয়, তাকে জবাবদিহি করতে হবে ইত্যাদি।
যার ফলে দেখা যায় মুসলিম ইতিহাসে অন্যের অধীনে চাকরি করার চেয়ে নিজে যেকনো একটা ব্যবসা করাটাই ছিলো সবচেয়ে জনপ্রিয়।
বিখ্যাত আলেম আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রাহিমাহুল্লাহ বলেন-
“আমি ব্যবসা করি নিজের সম্মান ও মর্যাদা সমুন্নত রাখতে। সেই সঙ্গে আল্লাহর আনুগত্য করতে যেন এই সম্পদ আমার সহায়ক হয়।” (খতিবে বাগদাদী, তারিখে বাগদাদ: ১০/১৬০)
No comments