বইনোট//একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণঃ তার থেকে বাঁচার উপায়//আব্বাস আলী খান
বইয়ের নামঃ-একটি_আদর্শবাদী_দলের_পতনের_কারণঃ তার থেকে বাঁচার উপায়লেখকঃ আব্বাস আলী খান
প্রকাশকের কথা:
বইটি ১৯৯৮ সালে প্রথম প্রকাশিত । ইসলামী সমাজ ব্যবসহা প্রতিষ্ঠা করার জন্য দরকার একটি আদর্শবাদী মজবুত সংগঠন।
★আদর্শবাদী দলঃ
১. প্রতিষ্ঠিত সমাজ ব্যবস্থা সমুলে উৎপাটিত করে তদস্থলে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হলে একটি আদর্শ বেছে নিতে হয়। এ চিন্তা ও আদর্শের সাথে যারা সকল দিক দিয়ে একমত পোষন করে তারা একটি দল গঠন করে। তাকে আদর্শবাদী দল বলে।
২. আদর্শবাদী দল ইসলামীও হতে পারে, অনৈসলামীও হতে পারে।
৩. আদর্শবাদী দলের নেতা কর্মীদের হতে হয় সাহসী ও ধৈর্য্যশীল।
৪. বিশেষ করে নেতাদের হতে হয় গতিশীল, দূরদর্শী, সমসাময়িক সকল সমস্যা সম্পর্কে পূর্ণ সচেতন এবং চরম সংকটময় মুহুর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহনকারী।
৫. দলের নেতৃত্ব ও নিয়ম শৃঙ্খলার আনুগত্য হবে সকলের জন্য অনিবার্য।
৬. তারা নিজেদেরকে আদর্শের ছাঁচে গঠন করবেন।
৭. আদর্শ বাস্তবায়নকে নিজেদের লক্ষ্য হিসেবে নিবেন।
৮. প্রয়োজনে জীবন পর্যন্ত দিতে পস্তুত থাকবেন।
★দারুল ইসলাম ট্রাস্ট গঠন ও ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্যে দল গঠনের পটভূমি রচনাঃ
১) ১৯৩৭ সালে আল্লামা ইকবাল মাওলানা মওদুদীকে হায়দারাবাদ থেকে পাঞ্জাবে হিজরত করার আহ্বান জানান।
২) অবসর প্রাপ্ত এসডিও চৌধুরী নিয়াজ আলী তার ষাট-সত্তর একর জমি ইসলামের জন্য ওয়াক্বফ করেন।
৩) আল্লামা ইকবাল চৌধুরী নিয়াজ আলীর নিকট ওয়াকফকৃত জমি তত্ত্বাবধানের জন্য মাওলানা মওদুদীর নাম প্রস্তাব করেন।
৪) ১৯৩৮ সালের ১৬ই মার্চ পূর্ব পাঞ্জাবের পাঠানকোটে হিজরত করে মাওলানা মওদুদী দারুল ইসলাম ট্রাষ্ট গঠন করেন।
★উন্মাদ (দেওয়ানা)ঃ
এখানে উন্মাদ বলতে দ্বীন প্রতিষ্ঠার ব্যপারে যে পাগলপারা তাকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ-
১) যে আগুন নিয়ে খেলতে চায়।
২) বাজী প্রায় হেরে গেছে এবং ময়দান হাতছাড়া হয়ে গেছে এ অবস্থাতেই যে মোকাবেলার জন্য দাড়িয়ে যায়।
৩) আসমান ও জমিনে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তু পর্যন্ত শত্রুতে পরিণত হলেও যে পরোয়া করেনা।
৪) উদ্দেশ্য হাসিলের পথে ব্যর্থতা সহ মৃত্যু-বরন করাকে দুনিয়াবী সাফল্যের উপর অগ্রাধিকার দিতে যে প্রস্তুত।
★জামায়াতের কাজঃ
১) কুরআন, হাদীস, সিরাত অধ্যায়ন করা।
২) আল্লাহর সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা।
৩) আদর্শের আলোকে চরিত্র গঠন করা।
৪) ফিরকা সৃষ্টি থেকে বিরত থাকা। ২য় অংশ
★আদর্শবাদীদলের পতনের কারনঃ
১) দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহন না করা।
২) কুরআন, হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন না করা।
৩) সময় ও আর্থিক কুরবাণীর ক্ষেত্রে অবহেলা।
৪) দলীয় মূলনীতি মেনে না চলা।
৫) ইনসাফ প্রতিষ্ঠা না করা।
৬) ভ্রাতৃত্ব বোধের অভাব।
৭) পারস্পরিক সম্পর্ক বিনষ্টকারী কাজ-
১. হিংসা, বিদ্বেষ।
২. গিবত, পরনিন্দা।
৩. পরশ্রিকাতরতা।
৪. পারস্পরিক সন্দেহ।
৫. বিপদে আপদে খোজখবর না রাখা।
৬. বৈষয়িক স্বার্থে ঝগড়ায় লিপ্ত হওয়া।
৭. অযথা কু-ধারনা পোষন করা।
৮) ইসলামী দল তার প্রকৃত পরিচয় হারিয়ে ফেলে এবং নিস্কৃয় প্রাণহীন হয়ে পরে যখন-
১. কৃত শপথ পূরণ না করা
২. নিয়মিত দাওয়াতী কাজ না করা
৩. মাসিক সাহায্য নিয়মিত না দেয়া
৪. আল্লাহর ভয় এবং আখেরাতের জবাবদিহির অনুভূতি না থাকা।
৯) জনশক্তির মধ্যে নৈরাশ্য ও হতাশার সৃষ্টি হওয়া।
১০) নেতৃত্বের অভিলাষ।
১১) অর্থ সম্পদের লালসা।
১২) সহজ সরল জীবন যাপন না করা।
১৪) নেতৃত্বের দূর্বলতা।
১৫) বাইতুলমালের আমানতদারীতার অভাব।
★বাঁচার উপায়ঃ
১) পতনের কারনের বিপরীত কাজ করা।
২) আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপন।
৩) অতিরিক্ত যিকির আজকার।
৪) আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।
৫) আত্মসমালোচনা।
৬) ক্রোধ দমন করা।
৭) মৌলিক বিষয়ে ঐক্যমত পোষন।
৮) বিরোধী পরিবেশ পরিস্থিতির দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া।
৯) সমস্যার তরিৎ ও সঠিক সমাধান।
১০) ত্যাগ ও কুরবাণী।
মোহাম্মদ আবু হানিফ হেলাল
-আহবায়ক, বাংলাদেশ মাদ্রাসা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ, ফেনী জেলা।
No comments